নিউক্লিয়াস হল কোষের প্রান।প্রতিটি জীবকোষের প্রোটোপ্লাজমে যে অধিকতর ঘন ও অপেক্ষাকৃত স্পষ্ট অঙ্গাণু বিদ্যমান এবং যা বংশগতির বাহক, ক্রোমোসোম ধারন করে ও কোষের যাবতীয় কার্যাবলী নিয়ন্ত্রণ করে তাকে নিউক্লিয়াস বলে। রবার্ট ব্রাউন ১৮৩১ সালে অর্কিড পাতার কোষ থেকে নিউক্লিয়াস আবিস্কার করেন ও এর নামকরন করেন।
একটি নিউক্লিয়াসের চারটি অংশ। অংশগুলো হল।
ক.নিউক্লিয়ার মেমব্রেন
খ.নিউক্লিওপ্লাজম
গ.নিউক্লিওলাস এবং
ঘ. ক্রোমাটিন তন্তু।
ক.নিউক্লিয়ার মেমব্রেনঃ
দ্বিস্তর বিশিষ্ট স্বচ্ছ ঝিল্লিবৎ বহিরাবনীই হল নিউক্লিয়ার মেমব্রেন।
ওপরের স্তরটি ছিদ্রযুক্ত এবং ভিতরের স্তরটি ছিদ্রবিহীন।
রাসায়নিকভাবে ইহা প্রোটিন ও লিপিড দিয়ে গঠিত।
কাজঃ
i.এরা নিউক্লিয়াসকে রক্ষনাবেক্ষন করে।
ii.সাইটোপ্লাজম হতে নিউক্লিওপ্লাজম, ক্রোমোসোম, ও নিউক্লিওলাসকে স্বতন্ত্র রাখাই এর প্রধান কাজ।
iii.অভ্যন্তরীণ দ্রব্য ও বহিঃস্থ সাইটোপ্লাজমের মধ্যে যোগাযোগ ও পরিবহন কাজটি এর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে।
খ.নিউক্লিওপ্লাজমঃ
এটা নিউক্লিয়ার মেমব্রেন দিয়ে আবৃত স্বচ্ছ ঘন দানাদার তরল পদার্থ।
রাসায়নিকভাবে এটা প্রোটিন, নিউক্লিক এসিড ও কিছু এনজাইম দিয়ে গঠিত।
নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরের প্রোটোপ্লাজমিক রসে নিউক্লিওলাস ও ক্রোমোসোম অবস্থান করে।
কাজঃ
i.ক্রোমাটিন জালিকা ধারন করে।
ii.নিউক্লিয়াসের বিভিন্ন জৈবিক কাজে সহায়তা করে।
iii.নিউক্লিওলাস ধারন করে।
গ.নিউক্লিওলাসঃ
নিউক্লিয়াসে যে ছোট ও অধিকতর ঘন গোলাকার বস্তু দেখা যায় তা-ই নিউক্লিওলাস।
নিউক্লিয়াস সাধারণত তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত। যথাঃ- মধ্যভাগের দানাদার অংশ, ক্রোমাটিন অংশ এবং মাতৃকা।
রাসায়নিকভাবে প্রোটিন, RNA এবং সামান্যই DNA দ্বারা এটা গঠিত।
কাজঃ
i.এরা বিভিন্ন প্রকার RNA সংশ্লেষন করে।
ii.বিভিন্ন সময়ে প্রোটিন সংশ্লেষ ও সংরক্ষন করে থাকে।
iii.নিউক্লিওটাইডের ভান্ডার হিসেবে কাজ করে।
ঘ.ক্রোমাটিন তন্তুঃ
নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরে সুতার মত প্যাঁচানো বস্তুগুলোই ক্রোমাটিন তন্তু। কোষ বিভাজন অবস্থায় ক্রোমাটিন তুন্তু ক্রমাগত কুন্ডুলিত হয়ে অপেক্ষাকৃত খাটো ও মোটা হয়ে পৃথক পৃথকভাবে দৃশ্যমান হয় তখন এদেরকে ক্রোমোসোম বলা হয়।
প্রতিটি ক্রোমোসোমে এক বা একাধিক সেন্ট্রোমিয়ার, ক্রোমোনেমা, পেলিক্যাল, ধাত্র এবং কখোনো স্যাটেলাইটও থাকে।
রাসায়নিকভাবে প্রতিটি ক্রোমোসোম DNA, RNA, হিস্টোন ও ননহিস্টোন প্রোটিন দিয়ে গঠিত।
কাজঃ
i.ক্রোমোসোম বংশগতির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ধারন ও বহন করে।
ii.কোষ বিভাজনে মুখ্য ভুমিকা পালন করে।
iii.মিউটেশন, প্রকরন সৃষ্টি ইত্যাদি কাজেও মুখ্য ভুমিকা পালন করে।
Leave a Comment